ঠোঁট ফাটার কারণ ও প্রতিকার

আমাদের প্রায় সবারই শীতকালে ঠোঁট ফেটে থাকে। শীতকালে ঠোঁট ফাটা অনেকটা স্বাভাবিক। কিন্তু অনেকের গরম কালেও ঠোঁট ফেটে যায় আবার কারো কারো তো সারা বছরই  ঠোঁট ফেটে। শীতকালে ঠোঁট ফেটে যাওয়া সাধারণ বিষয় হলেও গরমকালে বা সারা বছর ঠোঁট ফেটা কোনো সাধারণ বিষয় নয়।

কোনো একক কারনে আমাদের ঠোঁট ফাটে না । এর পিছনে রয়েছে অনেক কারন। আজকে আমরা এই নিবন্ধনের মাধ্যমে জানতে পারবো ঠিক কোন কোন কারনে আমাদের ঠোঁট ফাটতে পারে এবং এর থেকে বাচার উপাই গুলো কি কি।

ঠোঁট ফাটার কারণ সমূহ

যে সকল কারনে আমারে ঠোঁট ফাটতে পারে তা হলো:

শুষ্ক আবহাওয়া: শীতকালে বা শুষ্ক পরিবেশে বাতাসের আর্দ্রতা অনেক কমে যায়। যার ফলে ঠোঁটের চামড়া শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং পরে তা ফেটে যায়। শীতকালে প্রায় সবার এটা হয়ে থাকে এবং এটা স্বাভাবিক।

ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা: বিভিন্ন প্রতিকুল পরিবেশে বা ব্যস্ততার কারনে আমরা অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে পারিনা বা অবহেলায় করি না। এমতাবস্থায় শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকার কারনে ঠোঁটের চামড়াও শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ভিটামিনের অভাব: ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বা অন্য কোনো ভিটামিনের অভাব দেখা দিলেও ঠোঁট ফাটতে পারে। আমাদের ত্বককে মর্শারাইজ রাখতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে। এর অভাবেও অনেক সময় ঠোঁট পেটে যায়।

ঠোঁট চোষা বা কামড়ানো: অনেকের বারবার ঠোঁট চোষা বা কামড়ানোর অভ্যাস থাকে। বারবার ঠোঁট চোষালে বা কামড়ালে মুখের লালাতে থাকা এসিট ঠোঁটের চামড়াকে শুষ্ক করে তোলে, যার ফলেও ঠোঁট ফেটে যায়। 

সূর্যের আলো: অতিরক্ত সূর্যের আলোতে ঘোরাফিরা করলে সূর্যের আলোতে থাকা অতিবেগুনী রশ্মি ঠোঁটের চামড়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যা ঠোঁট ফাটার সম্ভাবনাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।

ঔষধের প্রতিক্রিয়া: ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়ার ফলেও অনেক সময় ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ফাটতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে যে কোনো খাবারের প্রতি এলার্জি বা পার্শপ্রতিক্রিয়ার কারনেও এমনটা হতে পারে।

স্বাস্থ্যগত সমস্যা: অনেকের থাইরয়েডের সমস্যা বা হরমোনাল সমস্যা বা অন্য কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারনেও ঠোঁট ফাটে।

নিম্নমানের প্রসাধনী: আজকাল বাজার নিম্নমানের প্রসাধনীতে ছয়লাব। নিম্নমানের এসব ক্ষতিকর প্রসাধনী ব্যবহারের ফলেও ঠোঁটের চামড়া শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়, যা ঠোঁট ফাটনের একটি অন্যমত কারণ হতে পারে।

ঠোঁট ফাটার প্রতিকার

চিকিৎসকরা ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পওয়ার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এগুলো হলো:

প্রচুর পানি পান করা : নিজেকে সুস্থ্য রাখতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে পানি পান করতে হবে। যেখানেই যাইনা কেনো পানি বোতল সাথে রাখতে হবে। আমাদের শরীরকে কোনো সময় ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্য হতে দেয়া যাবে না। ইটি যেমন আমাদের সুস্থ্য রাখবে তেমন ঠোঁট ফাটা থেকেও রক্ষা করবে।

ঠোঁটের যত্ন নেয়া : বিশেষ করে শীত কালে ঠোঁটের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এ সময় সবার ঠোঁটই শুকিয়ে যায়। বিশেষ যত্ন হিসাবে ঠোঁটে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে সেই মিশ্রন কিছুক্ষন লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলা যেতে পারে। এতে করে ঠোঁটের মরা বা শুষ্ক চামড়া গুলো চলে যাবে এবং ঠোঁট সুন্দর হেয়ে উঠবে।

তীব্র সূর্যালোক ও ধুলোবালি এড়ানো : ঠোঁট ফাটা থেকে রক্ষা পেতে যতটা সম্ভব তীব্র সূর্যালো ও ধুলোবালি এড়িয়ে চলুন।

পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহন করা : শরীরকে সুস্থ্য রাখতে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহন করার কোনো বিকল্প নেই। তাই সবার আগে আমাদের প্রতিদিন পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। যা আমাদের সুস্থ্য থাকতে সাহায্য করবে এবং সাথে সাথে ঠোঁট ফাটার হাত থেকেও বাচাবে।

প্রয়োজনে ভ্যাসলিন ব্যবহার করা যেতে পারে,  তবে যে কোনো রাসায়নিক মিশ্রিত কোন কিছুর ব্যবহার অতি সাবধানতার সাথে করতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসবকের পরামর্শ নিতে হবে।

Leave a Comment