তুলসি পাতার উপকারিতা

তুলসি পাতার উপকারিতা

তুলসি পাতার উপকারিতা: আমাদের হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য তুলসি গাছের উপকারিতার তালিকা অনেক। এই গাছের বীজ, বাকল, পাতা, শেকড় সবকিছুই অতি প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান। বহু ঔষুধিগুণে গুনান্নিত এই তুলসী গাছ আমাদের  বিভিন্ন রোগ সারাতে কাজ লাগে।

যেমন:  হাঁপানি, কাশি,সর্দিজ্বর,চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, কুষ্ঠ, বক্ষব্যাথা, ফুসফুসের দুর্বলতা, হাম, বসন্ত ইত্যাদি। এছাড়াও ঘামাচি, রক্তে চিনির পরিমাণ হ্রাস, কৃমি ও আমাশয় তুলসী গাছের বীজ, বাকল, পাতা ও শেকড় দিয়ে তৈরি ওষুধ বিশেষভাবে কার্যকর।

এই ঔষুধি গুন ছাড়াও তুলসীর আরও একটি গুণ রয়েছে, তা হলো মশা তাড়ানো। যে বাড়িতে তুলসি গাছ ধাকে সে বাড়িতে প্রাকৃতিকভাবেই  মশার উৎপাত অনেকটা কমে যায়।

সর্দি-কাশিতে তুলসি পাতার উপকারিতা

আমাদের প্রায় সবার জানা যে, ঠান্ডা লাগলে বা সর্দি-কাশি হলে তুলসি পাতা ওষুধ হিসেবে খাওয়া হয় কারন এটি সর্দি ও কাশি সারাতে খুব দ্রুত কাজ করে থাকে। যদি কারো বুকে কফ বসে যায় তাহলে প্রতিদিন সকালে তুলসি পাতা, আদা ও চা পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে লাগাতার ৬-৭ দিন খেতে দিন। এতে করে  ঠান্ডা লাগলে বা সর্দি-কাশি ধেকে দ্রুতই রক্ষা পাওয়া যায়।

গলা ব্যথা দূর করতে তুলসি পাতার উপকারিতা

ঠান্ডা লগার করনে যদি গলা ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে  তুলসি পাতায় আস্থা রাখতে পারেন। কারণ এমন সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে তুলসি পাতার জুড়ি মেলা ভার। তুলসি পাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে কয়েকদিন গার্গল ও কুলিকুচি করলে গলা ব্যথা দ্রুত সেরে যায়। এছাড়াও শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতেও এই তুলসি পাতা ভালো কাজ করে।

শরিরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তুলসি পাতার ব্যবহার

তুলসী পাতায় রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি, অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও রেডিওপ্রটেকটিভ মতো আরো অনেক উপাদান। যা শরীরের রোগ প্রাতরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অ্যাজমা, ফুসফুসের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি মোকাবিলায় এই পাতা খুব ভালো কাজ করে এবং মানসিক চাপও কমাতে সহায়তা করে।

ওজন কমাতে তুলসি পাতার ব্যবহার

নিয়মিন তুলসি পাতা বা পাতার রস খেলে  রক্তে সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টরল দুটোই রোধ করে। তাই এটির সাহায্যে খুব সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে , তুলসি দিয়ে তৈরি মাত্র ২৫০ মিলিগ্রামের একটি ক্যাপসুল প্রতিদিন খাওয়ার মাধ্যমে ওবেসিটি ও লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে যেকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডায়াবেটিস দূরে রাখতে তুলসি পাতার ব্যবহার

তুলসি পাতা ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য খুবই উপকারী একটি ঔষুধ। তুলসি পাতা ইনসুলিন উৎপাদনের কাজ করে। প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসি পাতা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায় বা নিয়ন্ত্রনে থাকে। তাছাড়া তুলসি পাতা অ্যান্টি ডায়াবেটিক ওষুধের কাজ করে। তুলসিতে থাকা স্যাপোনিন, ত্রিতারপিনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড ডায়বেটিস রোধ করতে বিশেষ কার্যকরী। তবে যেকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তুলসি পাতা খাওয়ার পদ্ধতি

সুস্থ অবস্থায় তুলসী পাতা খাওয়া যেতে পারে। কেননা এটি শরিরে রেগা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

  • তুলসি পাতা কাঁচা চিবিয়ে খাওয়া যায়।
  • পাতা বা বীজ ফুটন্ত পানিতে ফুটিয়ে চা হিসেবেও পান করা যেতে পারে।
  • তুলসি গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি প্রতিদিন খালি পেটে খেতে পারেন।

Leave a Comment