লবন দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট
সল্ট প্রেগন্যান্সি হলো HCG এর উপস্থিতি শনাক্ত করে বাড়িতে তৈরি একটি DIY টেস্ট যা নির্ধারণ করে আপনি প্রেগন্যান্ট কিনা।
লবণ এবং প্রস্রাব এই দুটি উপাদান ব্যবহার করে ফলাফল পেতে একসাথে মিশ্রিত করা হয়। যদি লবণ ভ্রুণ ইমপ্লান্ট করার পরেই প্রস্রাবে এবং রক্ত প্রবাহে আসে, এবং তার সাথে প্রতিক্রিয়া করে, তাহলে আপনি গর্ভবতী বলে মনে করা হয়।
আজকে আমাদের আলোচনার মুল বিষয় হল লবন দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিভাবে করবেন, তার ফল কেমন হবে এই বিষয়ে।
আরও পড়ুনঃ ফলিক এসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা
কীভাবে লবণ দিয়ে টেস্ট করবেন
১। প্রথমে পাত্রে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে প্রস্রাবের।
২। এরপরে, এক টেবিল লবণ নিতে হবে একটি পরিষ্কার বাটিতে।
৩। এরপর প্রস্রাব ঢ়েলে দিতে হবে সেই লবণের উপর।
৪। অপেক্ষা করতে হবে কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত।
৫। বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন পরামর্শ কারণ কোনও নির্দিষ্ট অপেক্ষার সময়কাল নেই।
কীভাবে এই টেস্টের ফলাফল পড়তে হয়
তথ্য অনুযায়ী, যদি কেউ গর্ভবতী হন, তবে মিশ্রণটি:
১। চিজ বা দুধের মতো রঙ হয়ে যায় রুপগত দিক থেকে।
২। ফেনাও থাকতে পারে মিশ্রণের উপরে।
৩। প্রস্রাবের ফলে যদি লবণ জমে যায়।
৪। টেক্সচার বা থকথকে পরিবর্তন হয়ে যায়।
এতে কোনও পরিবর্তন দেখা যাবে না যদি কেউ প্রেগন্যান্ট না হন। এর মধ্যে কিছুটা লবণ থাকবে এবং এটি দেখতে হবে প্রস্রাবের মতো।
অনেকে মনে করে যদি লবণের উপরে ফেনা তৈরি হয় তবে সেটা অবৈধ ফলাফল।
সল্ট প্রেগন্যান্সি টেস্ট কীভাবে কাজ করে
লবন দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্টগুলো কাজ সর্ম্পকে সঠিক কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখা এ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণাও করা হয় নি এই টেস্টের ফলাফল সমর্থন করার জন্য।
HCG লবণের সাথে প্রতিক্রিয়া করে, যার ফলে মিশ্রণটি দইয়ের মতো থকথকে বা ভিন্ন টেক্সচার বিশিষ্ট হয় বলে মনে করে যারা এই টেস্টটি সমর্থন করে থাকে। তবে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখা পাওয়া যায় না লবণ এবং HCG কেন এই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।
সল্ট প্রেগন্যান্সি টেস্ট কতটা সঠিক
একটি ভালো এবং মজাদার টেস্ট হিসাবে ধরা হয় লবন দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট। এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি, চিকিৎসাগত সমর্থন বা শারিরিক অনুমোদন নেই। সেই মহিলা গর্ভবতী হোন বা না হোন এটি সঠিক হওয়া উচিত, এমন সম্ভাবনা রয়েছে কারণ এতে কেবল দুটি সম্ভাব্য ফলাফল পাওয়া যায়।
লবণ যে HCG-এর সাথে প্রতিক্রিয়া করে এমন টা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। সুতরাং আপনার গাইনোকোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করুন এই টেস্টটি করার পরে। এই টেস্টের ফলাফলের উপর নির্ভর করা কারোও উচিত হবে না।
কখন সল্ট প্রেগন্যান্সি টেস্ট করানো উচিত
যদি আপনার প্রেগন্যান্সির সময় কোনও রকম লক্ষণ অনুভব করেন বা যদি আপনার পিরিয়ড মিস হয়ে যায় তবে সেক্ষেত্রে আপনি সল্ট প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে পারেন। এটি বলা হয় যে প্রথম প্রস্রাবে HCG আরোও ঘনীভূত অবস্থায় থাকে।
তাই সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই এই টেস্টটি করা উচিত। এই টেস্টটি খুব তাড়াতাড়ি করলে সেক্ষেত্রে ভুল ফলাফল পেতে পারেন। তাই যেদিন আপনার পিরিয়ড শুরু হওয়ার কথা সেদিন বা তার পরের দিন টেস্টটি করা উচিত।
লবন দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট – বিকল্প
বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট বেছে নেওয়ার। তবে সর্বদাই একটির আরও ভাল বিকল্প পাওয়া যায়।
খরচ
প্রেগন্যান্সি টেস্টটি ডিজিটাল বা প্রাথমিক অবস্থায় টেস্ট করাটা ব্যায়বহুল হতে পারে। তবে ব্যাক্তির বিনামূল্যে প্রেগন্যান্সি টেস্টের সুবিধা নিতে পারেন এমন অনেক ফ্যামিলি প্ল্যানিং রয়েছে তাদের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে এই সুবিধা নিতে পারেন।
কম খরচে স্ট্রিপ -ভিত্তিক প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাতে পারেন। এগুলো অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য এবং নির্ভুল যে-কোনও DIY প্রেগন্যান্সি টেস্টের চেয়ে।
অনলাইনে প্রেগন্যান্সি টেস্টের কিটগুলি অর্ডার করতে পারেন গোপনীয়তা বজায় রাখতে চান এমন ব্যাক্তিদের জন্য এই সুবিদা চালু আছে। স্ট্রিপ-বিত্তিক প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে পারেন যদি এটি সাশ্রয়ী মূল্যের না হয়। এই বিকল্পগুলি সহজেই ওষধের দোকান বা অনলাইন স্টোর থেকে অর্ডার করা যেতে পারে এবং এগুলো অনেক বেমি নির্ভরযোগ্য হয়ে থাকে।
শেষকথা
লবন দিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট বিনামূল্যে সহজ , প্রাকৃতিক হতে পারে বা এটি ভারো ধারণা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু এগুলোর প্রমানিত বা নির্ভরযোগ্য কোন ভিত্তি নাই। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি প্রেগন্যান্ট তবে গাইনোকলজিস্টের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তা নিশ্চিত হতে।
সল্ট টেস্ট সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর / FAQ
১। প্রেগনেন্সি টেস্ট কত দিনে করতে হয়?
উত্তরঃ যদি আপনার পিরিয়ড চক্র নিয়মিত হয়, তাহলে আপনি আপনার পিরিয়ড মিস হওয়ার প্রথম দিনেও গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করতে পারেন।
২। বাচ্চা পেটে আসার লক্ষণ কি কি?
উত্তরঃ লক্ষণগুলো নিম্নরূপ:
- স্তন নরম হয়ে যাওয়া
- মেজাজে চরম পরিবর্তন হওয়া
- বমি-বমি ভাব বা বমি (প্রভাতকালীন অসুস্থতা)
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া
- চরম ক্লান্তি বোধ হওয়া
- মাথাব্যথা করা
- বুকজ্বালা করা
৩। প্রেগন্যান্ট হওয়ার কত দিন পর বমি হয়?
উত্তরঃ গর্ভধারণ করার প্রথম লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বমি বমি ভাব এবং এটি সাধারণত ৬ষ্ঠ সপ্তাহের দিকে শুরু হয়। এই সময় থেকে শুরু করে সামনের সপ্তাহগুলোতেও এই বমি বমি ভাব থাকতে পারে।
আরও পরুন-
৬ মাসের গর্ভবতী বাচ্চার নড়াচড়া ও অবস্থান
৬ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ও সঠিক নিয়ম