গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

একজন নারী যখন গর্ভ ধারন করবে। তখন সেই নারীর গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন সেই নারীর শারীরিক গঠন, গর্ভের অবস্থান, গর্ভের থাকা বাচ্চার আকার ইত্যাদি বিষয়সমূহ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় পেটের যে কোনো পাশে বাচ্চা থাকার সম্ভাবনা আছে। সময়ের সাথে সাথে গর্ভে থাকা বাচ্চার আকার পরিবর্তন হতে থাকে। সেইসাথে আকার পরিবর্তন হওয়ার পড় বাচ্চাটি নড়াচড়া করতে থাকে। আসলে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে, গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে।

তবে স্বাভাবিক ভাবে গর্ভাবস্থায় প্রথমের দিকে বাচ্চা পেটের মাঝে থাকে। যখন ধীরে ধীরে সময় অতিক্রম করতে থাকে, তখন সেই বাচ্চার আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে। 

যার ফলে কোনো একজন গর্ভবতী নারীর জরায়ু আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। ঠিক সেই সময় বাচ্চাটি পেটের বিভিন্ন স্থানে নড়াচড়া করতে থাকে।

আজকের আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে, ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ, মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ ইত্যাদি বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।


আরও পড়ুনঃ-ঘন ঘন মাসিক হলে কি করণীয় ও নিয়ন্ত্রণের থেরাপি


গর্ভাবস্থায় ছেলে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

আমাদের বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ছেলে সন্তান নেওয়ার প্রবনতা অনেক বেশি থেকে থাকে। যার কারণে অনেকেই জানতে চাই, গর্ভাবস্থায় ছেলে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে। 

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে এই বিষয়টি সম্পর্কে যারা জানতে চান। তাদের বলবো যে, ছেলে বাচ্চা পেটের যেকোন স্থানেই থাকতে পারে।

তবে ছেলে বাচ্চা দিক থেকে বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। যার মাধ্যমে আগে থেকেই অনুমান যেতে পারে, গর্ভে থাকা বাচ্চাটি ছেলে। 

গর্ভাবস্থায় মেয়ে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

আসলে গর্ভে থাকা বাচ্চার অবস্থানের সাথে লিঙ্গের কোনো ধরনের সম্পর্ক থাকে না। গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে সেক্ষেত্রে একটি মেয়ে বাচ্চা যেমন পেটের বিভিন্ন পাশে থাকতে পারে। ঠিক তেমনি গর্ভে থাকা ছেলে বাচ্চাও পেটের বিভিন্ন পাশে থাকতে পারবে।

আমরা পেটের মধ্যে থাকা বাচ্চার অবস্থান নিয়ে যে লিঙ্গের অনুমান করে থাকে। আসলে সে গুলোর কোনো ধরনের ভিত্তি নেই। হয়ত অনেক প্রাচীন কাল থেকে এই কথা গুলোর প্রচলন থাকার ফলে, মানুষ এই সকল কথা গুলোকে সত্যি বলে মনে করে।

তবে আধুনিক বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা সর্বদা বলে থাকেন যে, পেটের বাচ্চার অবস্থানের সাথে লিঙ্গের কোন প্রকার সম্পর্ক থাকেনা। 

গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়

উপরের আলোচনা থেকে জানলাম, গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে। তো এই বিষয় টি জানার পাশাপাশি আমাদের আরো একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে হবে। সেটি হচ্ছে গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি কি সমস্যা হতে পারে।

যখন একজন নারী গর্ভাবস্থায়  সন্তান থাকা অবস্থায় ডান পাশ হয়ে ঘুমাবে। তখন বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর সেই সমস্যা গুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-

রক্ত সঞ্চালন ব্যহত হয়

যখন কোনো একজন গর্ভবতী নারী ডানপাশ হয়ে ঘুমাবে। তখন তার রক্ত সঞ্চালনে ব্যঘাত ঘটবে। যার কারণ হলো, ডান পাশে ঘুমালে জরায়ুর মধ্যে থাকা ইনফিরিয়র ভেনা কাভা নামক শিরার উপর চাপ বেড়ে যায়। যার ফলে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরার সাথে আরো নানান সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।

শিশুর বিকাশ ব্যহত হওয়া

যদি আপনি গর্ভবস্থায় ডানপাশ হয়ে ঘুমান। পেটের ডানপাশে অনেক বেশি চাপ পড়বে যা ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়। এছাড়াও পেট, জরায়ুর আকার যদি বড় হয় । তাহলে এই চাপের পরিমান আরো বেড়ে যাবে। 

আর উক্ত চাপের কারণে আপনার জরায়ুতে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যার ফলে শিশুর বিকাশে ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

ক্লান্তিবোধ করা

কোনো গর্ভবতী নারী যদি ডানপাশে হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করে থাকে। তাহলে তার মাথার দিকে রক্ত প্রবাহের মান কমে যাবে। 

যার ফলে সেই নারীর মধ্যে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি ক্লান্তি বোধ লক্ষ্য করা যাবে। মূলত সে কারণে চিকিৎসকগণ গর্ভাবস্থায় বাম পাশে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে – বাচ্চার অবস্থান

পেটের বাচ্চা সাধারণত অ্যান্টেরিয়র পজিশন বা অ্যান্টেরিয়র  অবস্থানে থেকে থাকে। পেটের বাচ্চা এই অবস্থানে থাকে তাহলে মায়ের প্রসবের সময় সহজ হবে। 

এ পজিশনে থাকলে বাচ্চাকে সুস্থ বলে ধরা হয়ে থাকে।  অর্থাৎ গর্ভধারি মায়ের পেটে বাচ্চার মাথা নিচের দিকে থাকে, বাচ্চার পিট মায়ের পেটের দিকে এবং বাচ্চার যে থুতনি তার বুকের সাথে লেগে থাকে। 

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ নিয়ে বিস্তারিত কিছু কথা নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে অনেকের মনে খুব কৌতূহল হয়ে থাকে।

  • গর্ভবতী নারীর যদি সামনের দিকে থাকে তাহলে ধারণ করতে পারেন আপনার ছেলে সন্তান হবে।
  • গর্ভবতী নারীর তলপেট যদি সামনের দিকে থাকে তাহলে ধারণা করতে পারেন আপনার ছেলে সন্তান হবে।
  • অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন ডান দিকের স্তন সাঈদীকে তুলনায় বেশি বড় হয়ে থাকে প্রাকৃতিক ভাবে তাহলে ধারণা করতে পারেন আপনার ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
  • অন্তঃসত্ত্বা হওয়া কালীন যদি বামদিকে ফিরে শুতে ভালো লাগে তাহলে আপনার পুত্র সন্তান হবে।
  • গর্ভবতী অবস্থায় আপনার চুল যদি লম্বা হয় তাহলে ধারণা করতে পারেন আপনার ছেলে সন্তান হবে।
  • ছেলে সন্তান হলে গর্ভবতী নারীর চুল সাধারনত বৃদ্ধি পায় ।

মেয়ে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

ছেলে সন্তান হওয়ার পাশাপাশি মেয়ে সন্তান নিয়ে অনেকে আগ্রহ করে থাকেন। যে লক্ষণ গুলো দেখতে পেলে ধারণা করতে পারেন মেয়ে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লক্ষণগুলো নিমরূপ

  • মিষ্টি খাওয়া প্রবণতা বেশি দেখা দিয়ে থাকে।
  • মাঝে মাঝে সকালবেলা একটু বেশি অসুস্থ হলে।
  • পেটের বাচ্চা দ্রুত হৃৎস্পন্দন হার বেশি হয়ে থাকলে।
  • গর্ভাবস্থায় নারীর পেট উঁচু দেখা দিলে।
  •  তোকে যদি ব্রণ এবং  তৈলাক্ত ভাব দেখা দিয়ে থাকে।
  • গর্ভে মেয়ে সন্তান হলে সাধারণত গর্ভবতী নারীর চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা উঠে যায়।
  • গর্ভবতী অবস্থায় চুল যদি দুর্বল উজ্জ্বল শূন্যতা হয় তাহলে ধারণা করতে পারেন আপনার মেয়ে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পরিশেষে

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে নির্ধারিত নয়। বাচ্চা যে কোন পাশে থাকতে পারে পরিস্থিতি মোতাবেক অনেকেই ধারণা করে থাকেন বাচ্চা পেটের পাশে থাকার উপরে নির্ভর করে ছেলে হবে না মেয়ে। আাসলে এটা আমাদের সম্পূর্ণ ভূল ধারণা। বাচ্চা কোন পাশের থাকার উপর লিঙ্গের সপৃক্ততা নেই। 

তবে কিছু লক্ষণের মাধ্যমে আপনি ধারণা করতে পারেন ছেলে হবে না মেয়ে। কোন কিছু সঠিকভাবে যাবে না। আশা করছি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে বিস্তরিত বোঝাতে পেরেছি। ধন্যবাদ।

গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর / FAQ

১। গর্ভের বাচ্চা কি একপাশে নড়াচড়া করতে পারে? 

উত্তরঃ মাথা নিচু করা শিশুরা একদিকে এবং বাম্পের উপরের দিকে আরও জোরে লাথি মারবে । পরবর্তীতে, কিছু শিশু তাদের মাথার নীচের দিকে প্রায়ই তাদের পা প্রসারিত করতে পছন্দ করে এবং এটি অনুভব করতে পারে যে আপনার বাম্পের উভয় পাশে কিছু একটা আটকে আছে – একপাশ নীচে থাকবে, অন্য পাশে হবে পা।

২। গর্ভবতী মহিলাদের কখন থেকে পেট বড় হয়? 

উত্তরঃ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে। এরপর ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার, তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবে। গর্ভের ভেতরে আপনার শিশু বেশ দ্রুত গতিতে বড় হচ্ছে। এরই মধ্যে আপনার পেটের আকার অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে।

৩। নির্ধারিত তারিখে কতজন শিশুর জন্ম হয়? 

উত্তরঃ মাত্র পাঁচ শতাংশ মহিলাই সঠিক তারিখে জন্ম দেন। বেশিরভাগ শিশু গর্ভাবস্থার 37 সপ্তাহ থেকে 41 সপ্তাহের মধ্যে আসে।

আরও পড়ুন-

ঘন ঘন মাসিক হওয়ার কারণ কি, এর প্রতিকার ও চিকিৎসা

গর্ভবতী মায়ের গ্যাসের ঔষধ এর নাম ও খাওয়ার নিয়ম

Leave a Comment