কিসমিস এর উপকারিতা
কিসমিস সকলেরই পরিচিত একটি খাবার। কিসমিস শরীরের জন্য যেমন অনেক উপকার করে, ঠিক তেমনি ভাবে সেক্সে কিসমিস এর উপকারিতা আছে।
আমরা আমাদের অজান্তেই অনেক কিছু খেয়ে থাকি। তেমনি ভাবে সেক্সের জন্য যে কিসমিস এর উপকারিতা রয়েছে তা কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না।
যদি আপনি কিসমিস পছন্দ না করে থাকেন। তাহলে আজকের পরে থেকে কিসমিস খাওয়া শুরু করেবেন। আজকের আর্টিকেলে কিসমিস এর উপকারিতা,
খাওয়ার নিয়ম, সেক্সে কিসমিস এর উপকারিতা ইত্যদি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
আরও পড়ুনঃ-খাঁটি মধু চেনার উপায়, কৌশল ও সঠিক পদ্ধতিসমুহ
কিসমিসের উপকারিতা কি কি

কিসমিস এর উপকারিতা অনেক যা আমাদের মানব দেহের জন্য খুবই জরুরী। নিম্নে কিসমিস এর উপকারিতা গুলো দেয় হলো-
১। কিসমিস ব্লাড প্রেসার ভাল রাখতে সাহায্য করে থাকে।
২। রক্ত স্বল্পতা কমাতে কিসমিস খুবই উপকারি খাবার। এছাড়াও রক্তে লাল রক্তকণিকা তৈরি করতে ভূমিকা রাখে।
৩। কিসমিস হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
৪। কিসমিস খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রোগের সাথে লড়াই করে আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
৫। কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সম্যাসা দূর হয়। সকালে খালি পেটে ভিজানো কিসমিস খেলে পায়খানার কষ্ট দূর হয়ে যাবে।
এছাড়াও আয়রনের ঘাটতি পূরন করতে সাহায্য করে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে, হার্টের সুস্থ রাখতে, ক্যান্সার প্রতিরোধে, ওজন নিয়ন্ত্রনেও বিশেষ ভুমিকা রাখে।
১. হজমে সহায়তা করে
নিয়মিত কিছু কিশমিশ খেলে পেট ভালো থাকে। এতে ফাইবার আছে, যা পানির উপস্থিতিতে ফুলে উঠতে থাকে। আর এগুলো পেটে রেচক প্রভাব বৃদ্ধি করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
এ ছাড়া প্রতিদিন কিশমিশ খেলে তা অন্ত্রের চলাচলকে সচল রাখে। তাতে থাকা ফাইবারগুলো বিষাক্ত পদার্থ ও বর্জ্য পদার্থকে সিস্টেমের বাইরে রাখতে সহায়তা করে।
২. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায়
কিশমিশে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম অনেক ভালো মাত্রায় থাকে। আর এগুলো অ্যাসিডিটি কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া সিস্টেম থেকে টক্সিন অপসারণের সাথে আর্থ্রাইটিস, গাউট, কিডনিতে পাথর এবং হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে থাকে।
৩. রক্তাল্পতায় উপকারী
কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে আয়রন এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, যার ফলে রক্তাল্পতার চিকিৎসায় সহায়তা করে। কিশমিশে থাকা তামা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতেও সহায়তা করে থাকে।
৪. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে
কিশমিশে ক্যাটেচিং নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যাল কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে থাকে। যা টিউমার এবং কোলন ক্যান্সারের কারণে হতে পারে।
৫. সংক্রমণের চিকিৎসায় সাহায্য করে
কিশমিশে আছে পলিফেনলিক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলো প্রদর্শন করে। এটি জ্বরের ঝুঁকি কমাতে এবং ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে থাকে। এ জন্য দিনে কয়েকটি কিশমিশ খেলে তা আপনার ঠাণ্ডা, অন্যান্য সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে।
৬. ওজন বৃদ্ধি করতে উপকারী
যদি ওজন বৃদ্ধি করতে চান, তা হলে আপনার জন্য কিশমিশ সেরা। এটি ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ সমৃদ্ধ. যা আপনাকে প্রচুর শক্তি দিতে সাহায্য করে থাকে। এটি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল জমতে দেয় না, ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৭. ত্বকের জন্য উপকারী
কিশমিশ ত্বককে ভেতর থেকে রক্ষা করে কোষকে যে কোনো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ, কোলাজেন, ইলাস্টিনের ক্ষতি থেকে ফ্রির্যাডিকেলগুলোকে বাধা দিয়ে থাকে।
যার ফলে এটি বার্ধক্যের লক্ষণ যেমন বলি, সূক্ষ্ম রেখা ও ত্বকে দাগ দেখা দেওয়ার সমস্যা বিলম্ব করতে সহায়তা করে থাকে।
সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা
কিসমিস এর উপকারিতার মধ্যে এটিও একটি উপকারিতা। যা আমরা অনেকেই জানি না।
১। কিসমিসে থাকা পুষ্টিগুন যৌন দূর্বলতা বা যৌন অক্ষমতা দূর করতে সহায়তা করে থাকে। যদি নিয়মিত কিসমিস খান তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২। প্রতিটা খাবার হজম হওয়া অত্যন্ত জরুরী। কিসমিস খাবার হজমের জন্য খুবই উপকারি। খাবার ঠিক মত হজম হলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা যৌবন ভাল রাখতে সাহায্য করে থাকে। যার জন্য নিয়মত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
৩। কিসমিস শরীর ও মন ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে, যখন মন ও শরীর ভাল থাকে তখন যৌন ইচ্ছা বা যৌন সমস্যা দূর হয়ে যায়।
আমরা অনেকেই মনে করি আমাদের যৌন সমস্যা আছে কিন্তু বাস্তবে সেটা নয়। একজন পুরুষের নানান চাপের কারনে যৌন ইচ্ছা কমে যায়। যার ফলে যৌন সমস্যা দেখা দেয়। বাস্তবে তার কোন যৌন সমস্যা থাকে না।
৪। কিসমিস রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে সহায়তা করে থাকে। আর যখন রক্ত চলাচল ব্যালেন্স থাকে তখন যৌন সমস্যা থাকে না। তাই নিয়মিত কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
৫। গবেষনায় দেখা গেছে, কিসমিস সেক্স পাওয়ার বাড়াতে সহায়তা করে থাকে। আপনি কয়েকদিন কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন দেখবেন আপনার সেক্স ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেক্সে কিসমিস এর উপকারিতা বিশেষ একটি গুন হলো এটি।
কিসমিস খাওয়া সঠিক নিয়ম
কিসমিস খাওয়া সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো সকালে খেতে হবে। রাতে ঘুমানো আগে পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে সেটা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
ভেজানো কিসমিসে থাকে আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার। নিয়মিত এভাবে কিসমিস খাওয়ার অভ্যাস করলে, সকল সমস্যার সমাধান দ্রুত পাওয়া সম্ভব।
পরিশেষে
নিয়মিত কিসমিস খেলে অনেক উপকার পাওয়া সম্ভব। কিসমিস খাওয়ার ফলে যেমন উপকার রয়েছে তেমনি অনেক অপকার ও রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খেলে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই সমস্যার সমাধান করতে হলে পরিমাণ মতো কিসমিস খেতে হবে। না হলে সমস্যা সমাধান হওয়ার বদলে সমস্য আরও বেড়ে যাবে। আশা করি কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কিত বিস্তারিত বোঝাতে পেরেছি। ধন্যবাদ।
কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর / FAQ
১। কিশমিশ খেলে কি মোটা হয়?
উত্তরঃ ওজন বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন সব মিলিয়ে ছোটো একমুঠো কিশমিশ খাওয়াই যায়, তবে শুধুমাত্র কিশমিশ খেলেই কিছু ওজন বাড়ে না। তবে কোনোকিছুই বেশি মাত্রায় সেবন স্বাস্থ্যকর নয়। এটি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে এর মধ্যে উপস্থিত প্রচুর পরিমাণ ক্যালোরির কারণে অযাচিতভাবে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২। রাতে কিসমিস ভিজিয়ে সকালে খেলে কি হয়?
উত্তরঃ হজমের সমস্যা বাড়াতে ২ থেকে ৪টি কিশমিশ সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে সেই কিশমিশ খান এবং বাকি জলটাও পান করুন। এর ফলে হজমের সমস্যা খুব কম সময়েই দূর হয়ে যাবে। কিশমিশে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সহায়ক।
৩। কিসমিস এ কি কি ভিটামিন আছে?
উত্তরঃ কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন-এ ও বিটা ক্যারোটিন। কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়: নিয়মিত কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে। আপনি যদি পেটের সমস্যায় নিয়মিত ভোগেন, তাহলে প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ভেজানো কিসমিস খান। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে কষ্ট পান তারা ওষুধের বদলে নিয়মিত কিসমিস খেয়ে দেখতে পারেন।
আরও পড়ুন-
ঘি এর উপকারিতা, ঘি খাওয়ার নিয়ম ও পুষ্টিগুণ
কাজু বাদাম খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা