কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস কমে
কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস কমে: ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের গবেষনা অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগির সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ এবং ২০ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের মধ্যে শতকরা প্রায় ১৫ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এটার কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমাদের খদ্যাভাস। সঠিক খাদ্যাভাস একদিকে যেমন ডায়াবেটিস কমাতে বা নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে তেমনি অন্যদিকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকিও অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
আজকের আর্টিকেলে আমরা এমন কিছু খাবার নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো ডায়াবেটিস কমানোর পাশাপাশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকিও কমায়। তো চলুন শুরু করা যাক।
কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস কমে
যে সকল খাবার খেলে ডায়াবেটিস কমে বা নিয়ন্ত্রনে থাকে সে খাবার গুলো হলো:
১. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
ফলমূল, শাকসবজি বিশেষ করে বেরি এবং ডাল বেশি বেশি করে খান। ফাইবার রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি রোধে খুব ভালো কাজ করে। আমাদের দেশে মনে করা হয় ডায়াবেটিস রোগীদের পেট ভরে খাওয়া যাবেনা, এটি ভুল ধারণা। বাংলাদেশে নানা ধরনের সবজি পাওয়া যায়। তারমধ্যে আলু, মটরশুঁটি, ভুট্টা এমন শর্করাযুক্ত সবজিগুলো এড়িয়ে টমেটো, শসা, বেগুন, মাশরুম এবং সবুজ শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলতে হবে। শাক-সবজি কাঁচা কিংবা সেদ্ধ করে খাতে হবে। অতিমাত্র তেলে রান্না করা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
২. লো-গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স (GI) খাবার
লো-গ্লাইসেমিক বা লো- GI খাবার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে হবে। লো-গ্লাইসেমিক খাবার ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। এই ধরনের খাবার গুলো হলো – বাদামি চাল, ওটস, ডাল, এবং কিছু সবজি যেমন – ব্রকলি, ফুলকপি ইত্যাদি। ডায়াবেটিসে মূল কারনই হচ্ছে রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে যাওয়া।
৩. চিনি ছাড়া চা
চায়ে থাকে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিশেষ করে এক্ষেত্রে ব্ল্যাক টি এবং গ্রিন টি অনেক বেশ উপকারী। আমাদের দেশে গ্রিন টি এখন সুলভ মূল্যে পওয়া যায়। বাজারে ব্ল্যাক টি বিভিন্ন মানের থাকায় এখনো অরজিনাল ব্ল্যাক টি তেমন সুলভ হয়নি বা হলেও বামে অনেক বেশি। চিনি ছাড়া এসকল চা সকাল ও রাতে খেতে পারলে শরীর চাঙা থাকবে সাথে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রন হবে।
৪. প্রোটিন যুক্ত খাবার খান
মাছ, মাংস, ডিম, ডাল এসব খাবার প্রোটিনের ভালো উৎস, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখার চেস্টা করুন। তবে গরুর মাংস এড়িয়ে মুরগীর, কোয়েলের এবং কবুতরের মাংস খাওয়া গেলে ভালো হয়।
৫. ফাস্ট ফুট এড়িয়ে চলুন
যে কোনো প্রসেস্ট ফুড বা খাবার যেমন পিজ্জা, বার্গার, কোল্ড গ্রিংস, ভাজা পোড়া, অতি মসলাদার খাবার সম্পূর্ন রূপে এড়িয়ে চলুন। এসকল খাবার যেমন রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় তেমন স্বাস্থ্য ঝুকিও তৈরি করে। তাই এসকল খাবার সস্পূর্ন রূপে এড়িয়ে চলুন।
৬. ওজন নিয়ন্ত্রণ
শরীরের ওজন সঠিক রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার ও শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত শরীরচর্চা কার খুবই জরুরী। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০-৪০ মিনিট হাঁটা ও অন্যান্য হালকা ব্যায়াম যেমন সাইক্লিং, সাঁতার কাটা, যোগ ব্যায়াম ইত্যাদি করার চেষ্টা করুন।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন কেননা পানি শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখার সাথে সাথে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন। সাথে সাথে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমতে হবে।
এক কথায় বলতে গেলে যে সকল খাবার রক্তে শর্করার পরিমান বেড়িয়ে দেয়ে সেগুলোকে পরিহার করে যে সকল খাবারে শর্করার পরিমান কম সেগুলোকে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে। এসকল খাবারের তালিকা কোনো ডাক্তারের পরামর্শে অথবা আমরা রিসার্স করেও বের করে নিতে পারি। ধন্যবাদ